১। শারীর শিক্ষার আধুনিক ধারণা সম্পর্কে আলোচনা কর।
শারীর শিক্ষার আধুনিক ধারণা সম্পর্কে আলোচনা
শারীর শিক্ষার আধুনিক ধারণা
শারীর শিক্ষা প্রকৃতপক্ষে মানবজীবনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে শিক্ষার চাহিদা পূরণের সোপান মাত্র। এই জন্যই শারীর শিক্ষা সামগ্রিক শিক্ষার একটি বিশেষ অংশ। বস্তুতপক্ষে শারীরশিক্ষা হলো সামগ্রিক শিক্ষার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যা মানুষের বৃহৎ পেশি সঞ্চালনের মাধ্যমে ব্যক্তিসত্তার বিকাশ সাধন করতে সাহায্য করে।
শারীর শিক্ষার শাখা বিভাগ :-
শারীর শিক্ষার ধারণা দুটি ধারায় বিভক্ত। যথা – শরীরের জন্য শিক্ষা ও শরীরের মাধ্যমে শিক্ষা। সর্বাধুনিক চিন্তাধারাতে অবশ্য শরীরের জন্য ও শরীরের মাধ্যমে শিক্ষা এই দুই মতবাদকেই স্বীকার করা হয়।
পরিবর্তনের যুগে শারীর শিক্ষা :-
আধুনিক যুগে জীবনযাত্রার যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। মানুষের শারীরিক কর্মক্ষমতা অনেকাংশে লাঘব হয়েছে এবং বেড়েছে অবসর ও অক্ষমতা। এমতাবস্থায় কর্মক্ষম ও সুস্থ থাকার জন্য সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত শারীরশিক্ষাই হলো একমাত্র উপায়। বর্তমান যুগে অসহনীয় চাপের মধ্যেও অভিযোজন করে বেঁচে থাকার তাগিদে শারীরশিক্ষার ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। শারীরশিক্ষা ও বিনোদনের মাধ্যমে মানুষ সুস্থতা ও আনন্দের সঙ্গে জীবন উপভোগ করতে পারছে।
আধুনিক যুগে শারীরশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা :-
- (১) শারীরিক বিকাশের জন্য অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম করে ধরে রাখার জন্য শারীরশিক্ষা অপরিহার্য।
- (২) মানসিক বিকাশ অর্থাৎ চিন্তা শক্তির বিকাশ, জ্ঞানের প্রসারণ ও প্রাক্ষোভিক উন্নতির জন্য শারীরশিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- (৩) সামাজিক বিকাশ অর্থাৎ সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে তার সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা, নেতৃত্বদান, পারস্পরিক মূল্যবোধ ইত্যাদি গড়ে তুলতে শারীরশিক্ষা অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে।
- (৪) দেশের উৎপাদনশীলতা ও সমৃদ্ধির বিকাশে শারীরশিক্ষা অপরিহার্য।
- (৫) ব্যক্তিত্বের বিকাশ শারীরশিক্ষার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই সুব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে গেলে শারীরশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
উপসংহার :-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে শারীরশিক্ষার অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শারীর শিক্ষার বিভিন্ন ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে শারীরশিক্ষা বলতে স্বাস্থ্য ও জীবনের উৎকর্ষতা বোঝায় এবং বর্তমানে শারীরশিক্ষার কার্যক্রমগুলি পরিশ্রম বিমুখজনিত রোগের থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।